প্রয়াত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান বিবেক দেবরায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। বাঙালি অর্থনীতিবিদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “বিবেক দেবরায়জি অর্থনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, আধ্যাত্মিকতা এবং আরও অনেক বিষয়ে সুপণ্ডিত ছিলেন।”
তিনি আরও লেখেন, “তার কাজের মাধ্যমে, তিনি ভারতের বৌদ্ধিক মননে স্থায়ী ছাপ রেখে গেলেন। জনসম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবদানের বাইরেও নানা ভূমিকা ছিল তার। তিনি আমাদের প্রাচীন গ্রন্থগুলিকে আধুনিক ভাষার মাধ্যমে যুবসমাজের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আমি দেবরায়কে বহু বছর ধরে চিনতাম। আমি তার অন্তর্দৃষ্টি এবং শিক্ষামূলক বক্তৃতার কথা মনে রাখব।”
বিবেক দেবরায় পড়াশোনা করেন প্রথমে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শেষে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বিবেক দেবরায়ের জন্ম শিলংয়ের এক বাঙালি পরিবারে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বিবেক দেবরায়ের পিতামহ বাংলাদেশের সিলেট থেকে শিলং চলে আসেন। বিবেক কলকাতায় পড়াশোনা শেষ করে দিল্লিতে স্কুল অফ ইকোনমিকস্-এ পড়াশোনা করেন। এরপর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি।
অসুস্থতার জন্য তিনি ভর্তি ছিলেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)-এ। সেখানেই শুক্রবার দেহত্যাগ করেন তিনি। দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘটলে যোজনা কমিশন ভেঙে নীতি আয়োগ গড়ার পর সেখানে পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য করা হয় দেবরায়কে। বিবেক দেবরায় ইউপিএ জমানায় রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পোরারি স্টাডিজ-এর অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে নীতি আয়োগের পরিচালন সমিতির সদস্য পর থেকে বাদ পড়লেও তাকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়। পরবর্তীকালে তিনি ওই পরিষদের চেয়ারম্যান হন। বাঙালি এই অর্থনীতিবিদের মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত সকলেই। ২০২৩ সালে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এক নিবন্ধে বিবেক দেবরায় ভারতীয় সংবিধান পরিবর্তনের জন্য সওয়াল করলেও তা বিরোধী দলগুলি নাকচ করে দেয়।