বিবাহের আগে কুণ্ডলী মিলন কেন জরুরি: জ্যোতিষশাস্ত্রের বিশদ বিশ্লেষণ

বিবাহ শুধু দুটি মানুষের মিলন নয়; দুই পরিবার, দুই জীবনধারা এবং দুই ভবিষ্যতের সংযোগ। তাই ছাঁদনাতলায় বসার আগে বর-কনের মানসিক সামঞ্জস্যের পাশাপাশি জন্মছক মিলিয়ে দেখা বা কুণ্ডলী মিলন—জ্যোতিষশাস্ত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আজকাল অনেকেই কুণ্ডলী মেলানোকে অপ্রাসঙ্গিক মনে করেন, কিন্তু বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র মনে করে এই ‘যোটক বিচার’-এর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ভবিষ্যৎ দাম্পত্যের সুখ-দুঃখের ইঙ্গিত।

রাশি ও উপাদান–সামঞ্জস্যের গুরুত্ব

বিয়ে (Marriage)
বিয়ে (Marriage)

জ্যোতিষ মতে, রাশি মানুষের প্রবৃত্তি, মনোভাব ও স্বভাবের একটি মূল নির্দেশক। একই উপাদানের রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত বেশি সুরে মেলে। উদাহরণস্বরূপ—জলের অধীন রাশি কর্কট, বৃশ্চিক ও মীনের মধ্যে বিবাহ হলে সংসার সাধারণত স্থিতিশীল হয়।
কিন্তু জলের রাশির সঙ্গে আগুন উপাদানভুক্ত মেষ, সিংহ বা ধনুর মিলন ঘটলে নানা মতবিভেদ দেখা দিতে পারে। কারণ দুই উপাদানের স্বভাবগত পার্থক্য ভবিষ্যৎ দাম্পত্যে বিরোধ ও দ্বন্দ্ব আনতে পারে।

অষ্টকূট মিলন: কুণ্ডলী বিচারের ভিত্তি
বৈদিক কুণ্ডলী মিলনে সবচেয়ে গুরুত্ব পায় অষ্টকূট মিলন, যেখানে আটটি দিক বিচার করে মোট ৩৬টি গুণ নির্ণয় করা হয়।
এই গুণগুলির মধ্যে ১৮ বা তার বেশি মিললে বিবাহকে সাধারণত অনুকূল ধরা হয়।
এই মূল্যায়নের মাধ্যমে বর–কনের—
*স্বাস্থ্য,
*স্বভাব,
*মানসিকতা,
*অর্থনৈতিক স্থিতি,
*পারস্পরিক সামঞ্জস্য
সবকিছুই বিচার করা হয়। নক্ষত্রকূট বা নক্ষত্র মিলনও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক সমন্বয় ও শুভফল নির্দেশ করে।

যোটক বিচারের ‘দোষ’—যা অবশ্যই বিবেচ্য
কুণ্ডলী মিলনে কিছু বিশেষ ‘দোষ’ পাওয়া গেলে তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য—

১. নাড়ী দোষ:

বিয়ে (Marriage)
বিয়ে (Marriage)

এটি সবচেয়ে গুরুতর বলে গণ্য। নাড়ী দোষ থাকলে ভবিষ্যতে সন্তানের স্বাস্থ্য, দাম্পত্য স্থিতিশীলতা কিংবা পারিবারিক শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে বলে জ্যোতিষে ধরা হয়।

২. মঙ্গল বা কুজ দোষ:

বিয়ে (Marriage)
বিয়ে (Marriage)

মঙ্গলের অশুভ প্রভাব বিবাহিত জীবনে অস্থিরতা, কলহ কিংবা বিচ্ছেদের আশঙ্কা বাড়ায়। তাই এই দোষ থাকলে নির্দিষ্ট প্রতিকার বা শান্তি-কর্ম করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন
মঙ্গল-শনি দোষ কাটাতে নারকেলের টোটকা: হিন্দুশাস্ত্রে চার উপায়ের গুরুত্ব

সপ্তম ভাব ও শুভ গ্রহের প্রভাব
জ্যোতিষশাস্ত্রে সপ্তম ভাবকে বিবাহ ভাব বলা হয়। এই ভাবের অধিপতি গ্রহ এবং জন্মছকে তার অবস্থান দাম্পত্য জীবনের সাফল্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে।
তাছাড়া, শুক্র, যা প্রেম ও সম্পর্কের কারক, এবং বৃহস্পতি, যা শুভকারক গ্রহ—এই দুটির অবস্থান কেমন তা বিয়ের আগে বিশেষভাবে দেখা হয়। অনুকূল অবস্থান হলে তা সুখী দাম্পত্য জীবনের ইঙ্গিত দেয়।

আরও পড়ুন
জ্যোতিষশাস্ত্রের দৃষ্টিতে কোন গ্রহ দুর্বল হলে কোন সমস্যা দেখা দিতে পারে ? জানুন প্রতিকার

সারসংক্ষেপ
প্রেম কিংবা সম্বন্ধ—যেভাবেই শুরু হোক, শুধুই বাহ্যিক মিল বা আবেগের উপর ভিত্তি করে বিবাহ করা যথেষ্ট নয় বলে মনে করে জ্যোতিষশাস্ত্র। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ, সামঞ্জস্যের মাত্রা এবং পারিবারিক শান্তি—সবকিছু নিশ্চিত করতে কুণ্ডলী মিলনকে একটি বৈজ্ঞানিক কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
অতএব, জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কুণ্ডলী মিলন একদিকে ঐতিহ্য, অন্যদিকে ভবিষ্যৎ-নিরাপত্তার একটি পথপ্রদর্শক। বৈদিক নিয়ম মেনে যোটক বিচার করালে দাম্পত্য জীবনের পথে অনেক অশান্তি এড়ানো সম্ভব বলেই মনে করেন জ্যোতিষবিদরা।

আরও পড়ুন
শীতে ঘুমের সমস্যা? বিছানার পাশে বেকিং সোডা রাখলেই মিলতে পারে উপশম

শুধু হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় না, জোয়ান খেলে শরীরের অনেক সমস্যা নিবারণ হয় মুখরোচক বাদাম চিক্কি খেতে দারুন, বাড়িতেই তৈরী হবে, জানুন রেসিপি এইভাবে তেজপাতা পোড়ালে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে 5 Best Night Creams ৪ মাসের শিশু ২৪০ কোটির মালিক