ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর থেকেই ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমানকে ঘিরে সন্দেহ ও বিতর্ক বাড়ছিল বিভিন্ন মহলে। এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সংস্থা দাবি করল, রাফালের বিরুদ্ধে সংগঠিত ভুয়ো প্রচারের পিছনে রয়েছে চিন। আমেরিকা-চিন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের (USCC) সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে এই বিস্ফোরক অভিযোগ।
জে-৩৫ সফল দেখাতেই রাফালকে টার্গেট?
রিপোর্ট অনুযায়ী, নিজেদের জে-৩৫ যুদ্ধবিমানকে আন্তর্জাতিক বাজারে শক্তিশালী দেখানোর জন্য রাফালের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেয় বেজিং। এই প্রচারের জন্য নাকি ব্যবহার করা হয়েছিল শতাধিক ভুয়ো সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট। সেগুলির মাধ্যমে এআই-সহায়তায় তৈরি ছবি ছড়িয়ে দেখানো হয়—চিনের অস্ত্রে নাকি রাফাল বিধ্বস্ত! তবে মার্কিন রিপোর্ট স্পষ্ট জানায়, এ সবই ছিল সম্পূর্ণ ‘ভুয়ো’ কনটেন্ট।
ভারত-পাক সংঘাতকে কাজে লাগাল চিন
সংঘাতের সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। রাফাল ধ্বংসের কথাও বারবার বলেছে ইসলামাবাদ। ভারতের তিন বাহিনীর প্রধান অনিল চৌহান স্বীকার করেছিলেন—বিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঠিকই, তবে সংখ্যা বা কোন মডেলের তা স্পষ্ট করেননি। এই ধোঁয়াশাকেই কাজে লাগিয়ে রাফালের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে শুরু হয়েছিল ভূয়ো প্রচার, দাবি মার্কিন রিপোর্টের।
ফরাসি গোয়েন্দাদের আগেই ছিল সন্দেহ
এর আগেও ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানিয়েছিল—রাফালের আন্তর্জাতিক বিক্রি কমাতে একটি সংগঠিত লবি সক্রিয়, যার পেছনে চিনের প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা। ফ্রান্স সরকারও বলেছিল, রাফালের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভুয়ো সংবাদ প্রচার চালানো হচ্ছে এবং তারা তার মোকাবিলা করছে।
ইন্দোনেশিয়ার চুক্তি স্থগিতের নেপথ্যেও চিন?
ভারত-পাক সংঘাতের পর রাফালের কার্যক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ায় ইন্দোনেশিয়া ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত রাখে। মার্কিন রিপোর্টে দাবি—এই সিদ্ধান্তেও পরোক্ষে ভূমিকা ছিল চিনের ভুয়ো প্রচারের।
পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি
রিপোর্টে আরও উঠে এসেছে, পাকিস্তান আগেই জে-৩৫ ব্যবহার করছে। ২০২৫ সালের জুনে পাকিস্তানকে আরও ৪০টি জে-৩৫ যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ নজরদারি বিমান ও ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে চিন। প্রায় একই সময় ইসলামাবাদ প্রতিরক্ষা বাজেটও বাড়িয়েছে
আরও পড়ুন
ট্রাম্পের শুল্ক হ্রাসে ভারতীয় রপ্তানিতে আশার আলো
চিনের এআই-চালিত তথ্যযুদ্ধ শুধু সামরিক প্রচারণার বিষয় নয়; আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বাজারে প্রভাব বিস্তার ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলিকে চাপে রাখার নতুন কৌশল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
