RG Kar issue Case in Supreme Court: আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। আজ মঙ্গলবার দেশের চিফ জাস্টিস ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। এই মামলা চলাকালীন প্রথমেই প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করার। এর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি রাজ্যের প্রশাসন, রাজ্য পুলিশ ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের তরফে প্রশ্ন করা হয় কর্মরত অবস্থায় একজন চিকিৎসক রাতে খুন হওয়ার পর পরের দিন সকালে তার দেহ উদ্ধার হয়৷ এরপর তার মৃত্যু অস্বাভাবিক এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর রাত ৮টা নাগাদ মৃতার দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের কাছে। অবশেষে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে খুনের মামলা রুজু করা হয় পরিবারের তরফে। মৃতার বাবা থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন। প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী করছিল।
এর পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে পদত্যাগ করার পর আর জি কর হাসপাতালের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ফের আরও একটি হাসপাতালের দায়িত্বশীল পদে যোগ দিলেন কীভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি বলেন, “বিকেলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় খুন। এফআইআর দায়ের হয়েছিল রাত ১১টা ৪৫মিনিটে। তার আগে কী করছিলেন অধ্যক্ষ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ? ওই সময়ে মৃতার বাবা-মা ছিলেন না। হাসপাতালের দায়িত্ব ছিল এফআইআর দায়ের করা।”
রাজ্যের তরফ থেকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বলকে প্রধান বিচারপতি আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে কী করা হবে জিজ্ঞেস করলে কপিল সিব্বল বলেন, শীর্ষ আদালত যা বলবে তাই করবো। এর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজ্য কোনো শান্তিপ্রিয় প্রতিবাদীদের উপর বলপ্রয়োগ করতে পারে না। অর্থাৎ আগামীতে রাজ্যে হওয়া শান্ত মিছিলে কোনোরকম লাঠিচার্জ বা পুলিশি হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ২২শে আগস্ট বৃহস্পতিবারের মধ্যে সিবিআই-এর তরফে শীর্ষ আদালতে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি গত ১৪ই আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে যে হামলাকারীরা হামলা চালায় সেই বিষয়ে রাজ্যের তরফে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। এছাড়া প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় কর্মবিরতি টানা চিকিৎসককের অনুরোধ করেছেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার।
মামলা চলাকালীন রাজ্য সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। গোটা ঘটনায় পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে আত্মহত্যা বলে মৃতার পরিবারকে জানানো হয় হাসপাতালের তরফে। কিন্তু পরে দেখা যায় এটি খুন। এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা ওঠে এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মামলার ভার সিবিআই-এর হাতে দেয়। এর পাশাপাশি পদত্যাগ করা সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে কোনো নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক পদে বসানো যাবে না বলেও নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে ঘটনার প্রবাহ দেখে ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পর অনেকেই বলেন এটি একাধিক জনের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এতেই বাকিদের আড়াল করার অভিযোগ আসে। এরপর আন্দোলনে নামেন চিকিৎসকেরা ও কর্মবিরতির ডাক দেন তারা। কলকাতা সহ গোটা রাজ্য ও দেশের মানুষ বিচার চেয়ে কলকাতায় নামেন। আর এইসময় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহন করে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন,
*RG Kar Case: যৌনাঙ্গ, গলা, কাঁধে বীভৎস ক্ষত ! নির্যাতিতার ময়নাতন্তের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য