১৯শে আগস্ট সোমবার রাখীপূর্ণিমা! ভাই-বোনের সম্পর্ককে অটুট করতে এই অনুষ্ঠান পালিত হয় প্রত্যেক হিন্দু বাড়িতে। তবে আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন রাখী শুধু বোনেরা ভাইকেই পরায় না, স্বামীর মঙ্গল কামনায় স্ত্রী’রাও স্বামীর হাতে এই রাখী পরাতে পারেন। শুনতে অবাক লাগলেও তেমনটাই সত্যি।
তবে এই রীতি প্রচলিত আছে রাজস্থানে। যেখানে আপনি যদি মহিলা হন আর আপনার যদি দাদা থাকে তাহলে দাদার পাশাপাশি বৌদিকেউ রাখী পরাতে পারেন। একে বলা হয় লুম্বা রাখি। যার অর্থ হলো চুড়ি। মূলত নারীশক্তিকে উদযাপন করার জন্য এই প্রথা প্রচলিত।
মহারাষ্ট্রে রাখীপূর্ণিমার নারিয়াল পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। যেখানে শ্রাবণ মাসের শেষ দিন পূর্ণিমা তিথিতে সমুদ্রে নারকেল অর্পণ করে ভগবান বিষ্ণুর প্রার্থনা করা হয়। যদি আমরা হিন্দু পুরাণ দেখি তাহলে দেবরাজ ইন্দ্র রাক্ষসদের সাথে যখন যুদ্ধে যাচ্ছিলেন তখন তার মঙ্গল কামনায় স্ত্রী ইন্দ্রানী রাখীপূর্ণিমার দিন তার হাতে সুতো বেঁধে দিয়েছিলেন।
আরেকটা কাহিনীতে শোনা যায় ভগবান বিষ্ণুকে নিজের তপস্যার দ্বারা সন্তুষ্ট করেছিলেন রাজা বলি। তখন ভগবান বিষ্ণু বর হিসেবে বলির প্রাসাদে থাকার কথা দিয়েছিলেন। তবে দেবী লক্ষ্মী এই সিদ্ধান্তে রাজি ছিলেন না। তাই তিনি রাজা বলির হাতে রাখী পরিয়ে উপহারস্বরূপ ভগবান বিষ্ণুকে সেই বচন থেকে মুক্ত করেছিলেন।
মহাভারতেও রাখীপূর্ণিমার উল্লেখ রয়েছে। কৃষ্ণের হাত কেটে গেলে নিজের শাড়ি থেকে কাপড় ছিঁড়ে হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন দ্রৌপদী। এরপর তাকে সারাজীবন রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন কৃষ্ণ। পরে ভরা রাজসভায় যখন তার সম্মানহানির চেষ্টা করা হয় তখন সেখানে কৃষ্ণ উপস্থিত হয়ে রক্ষা করেন।
এছাড়াও ভারতের ইতিহাসে রাখীবন্ধনের উল্লেখ রয়েছে। ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেছিলেন। তখন কটোচ রাজ্যের রাজা ছিলেন পুরু। আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানা স্বামীর সুরক্ষার কথা ভেবে রাজা পুরুকে একটি রাখী পাঠিয়েছিলেন। এরপর আলেকজান্ডারের সাথে যুদ্ধ করেননি পুরু।