Batukeshwar Dutta: ‘ভগৎ সিং’কে নিয়ে ১৮ দিন লুকিয়েছিলেন এই গ্রামে, প্রজাতন্ত্র দিবসে বীরবিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তকে শ্রদ্ধার্ঘ্য

Batukeshwar Dutta: 'ভগৎ সিং'কে নিয়ে ১৮ দিন লুকিয়েছিলেন এই গ্রামে, প্রজাতন্ত্র দিবসে বীরবিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তকে শ্রদ্ধার্ঘ্য

আজ ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের সকাল থেকেই নানান জায়গায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতিবারের মতন এবারও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত’র বসতভিটায়। তিনি ১৯১০ সালের ১৮ই নভেম্বর অধুনা পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষের ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধে তার অবদান অনস্বীকার্য। তাই এখনও তার বসতভিটা যে গ্রামে সেখানকার মানুষেরা বটুকেশ্বরকে মনে রেখেছেন। তার পৈতৃক বাড়ি আগলে রেখেছেন গ্রামবাসীরা। এর পাশাপাশি গঠন করা হয়েছে ‘বটুকেশ্বর দত্ত স্মৃতি সংরক্ষণ’ কমিটি।

স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বটুকেশ্বর ভগৎ সিং-কে নিয়ে এই গ্রামেই লুকিয়ে ছিলেন। তাই স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন এই বিপ্লবীর বসতভিটায় জাতীয় পতাকা তুলে তাকে সম্মান জানান গ্রামের মানুষ। এবছরেও তার অন্যথা হয়নি। বর্তমানে বটুকেশ্বর দত্তের বসতভিটে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে। ইতিমধ্যে বটুকেশ্বর দত্তের বসতভিটেটি সংস্কারের কাজ চলছে। বসানো হয়েছে মহান বিপ্লবীর আবক্ষ মূর্তি।

আরও পড়ুন,
*Republic Day: ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস, বিশ্বের একমাত্র অশ্বারোহী রেজিমেন্ট, রাডার থেকে মিসাইল, প্রজাতন্ত্র দিবসে সামরিক শক্তি প্রদর্শন ভারতের
*গাছেরাও একে অপরের সঙ্গে কথা বলে! এই প্রথম ধরা পরলো জাপানি বিজ্ঞানীদের পরীক্ষাতে

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বটুকেশ্বর দত্তের নাম লেখা রয়েছে স্বর্ণাক্ষরে। ১৯২৮ সালের ১৭ই ডিসেম্বর বটুকেশ্বর দত্ত ও ভগৎ সিং বোমা নিক্ষেপ করে অত্যাচারী ইংরেজ পুলিশ অফিসার স্যাণ্ডারসনকে লাহোরে হত্যা করেন। এরপরই তাদের দু’জনকে ইংরেজ পুলিশ খুঁজতে শুরু করে। সেইসময় বটুকেশ্বর ও ভগৎ সিং ইংরেজদের চোখে ধুলো দিয়ে ওঁয়াড়ি গ্রামে এসে আশ্রয় নেন। এই গ্রামটিও ইংরেজ পুলিশ ঘিরে ফেলে। শেষে বটুকেশ্বর দত্ত ভগৎ সিং-কে নিয়ে নগেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষের বাড়ির পাতাল ঘরে আত্মগোপন করেন।

টানা ১৮দিন তারা এই ঘরে আত্মগোপন করেছিলেন। ১৮ দিন পর তারা ছদ্মবেশে ইংরেজ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ওই গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ওই কয়েকদিন আত্মগোপন থাকার সময় তারা একটি পরিকল্পনা করেন যা পরে জানিয়েছেন নগেন্দ্রপ্রসাদের উত্তরসূরি প্রণব ঘোষের স্ত্রী রেখা ঘোষ। আর তা তিনি শুনেছেন তার স্বামীর কাছ থেকে। এরপর ১৯২৯ সালে ৮ই এপ্রিল ভগৎ সিং-এর সঙ্গে দিল্লির কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা ফাটান। এরপরই তিনি ও ভগৎ সিং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানে ভরিয়ে দেন।

শেষে ভগৎ সিং-কে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয় এবং বটুকেশ্বর দত্ত কারাগারে বন্দি থাকেন। সেইসময় তার উপর শারীরিক নির্যাতন করে ইংরেজ পুলিশরা। দেশের জন্য লড়লেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বীর বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত সঠিক মর্যাদা পাননি। সামান্য রুটিরুজির জন্য তাকে কখনও সিগারেট এজেন্সির কাজ করতে হয়েছে বা পাউরুটি বিক্রি করতে হয়েছে। এরপর তার স্ত্রী অঞ্জলি দেবী সংসার সামলাতে স্কুলে শিক্ষিকার কাজ শুরু করেন।

১৯৬৪ সালে বটুকেশ্বর দত্ত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য বেড পাওয়া যায়নি। এরপর তাকে দিল্লির সবরমতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি। শেষে ১৯৬৫ সালের ২০শে জুলাই মায়ের কোলে মাথা রেখে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বটুকেশ্বর দত্ত। মমতা ব্যানার্জী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বটুকেশ্বর দত্তের বসতভিটে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেন।

এরপর সেই জায়গা সংস্কারের কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। বসত ভিটা সহ মাটির দেওয়াল ও টিনের চালার বাড়ির কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে হয় সংস্কার কাজ। সেখানে তৈরি হয়েছে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তের আবক্ষ মূর্তি। বর্ধমান স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ভারতীয় রেলের তরফে স্টেশনের নাম রাখা হয় বটুকেশ্বর দত্তের নামে।

আরও পড়ুন,
*দেবশ্রী রায় গ্রেপ্তার! এমন কী করলেন টলিউডের ‘কেমিস্ট্রি মাসি’?
*Bigg Boss-এ মামাতো দিদির নাম শুনেই চটে গিছিলেন, বোন মান্নারা ফাইনালে পৌঁছতেই শুভেচ্ছাবার্তা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার