কালী পুজোর রাতে নরবলি দিলে তন্ত্রসাধনায় সাফল্য মেলে। এমন কুসংস্কার এখনও অনেক গ্রামে ছড়িয়ে রয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই কুসংস্কারের বলি হয়েছে দুই শিশু। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের দেওবন্দ এলাকায়৷ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সুপার। ঘটনার তদন্ত করার আশ্বাস দেন তিনি।
পুলিশ সুপার সাগর জৈন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাইরে শ্মশান এলাকায় একটি মন্দির দেখতে গিয়েছিলো দেব নামে ১১ বছরের এক বালক ও মাহি নামের ৯ বছরের এক বালিকা। তারা দু’জনে ভাইবোন। মন্দিরে গেলেও অনেক রাত হওয়ার পরও তারা বাড়ি ফেরে না। এরপর তাদের পরিবারের লোকেরা ও গ্রামের সকলে চারিদিকে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকেন।
এরপর হঠাৎই গ্রামের এক যুবকের বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখা যায় দেবের দেহ। সেখান থেকে কয়েক পা দূরে একটি খাদের ভিতর পড়ে থাকতে দেখা যায় মাহির দেহ। এই ঘটনা জানার পর সেখানে তড়িঘড়ি পুলিশ হাজির হয়। এরপর তাদের দেহ ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় দু’জনের শরীরে বেশ কয়েকটি হাড়গোড় ভেঙে গিয়েছে।
তাদের মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলেও পরীক্ষায় উঠে আসে। পুলিশের দাবি, দুই ভাইবোন গাড়িতে ঢাক্কা লেগে এমন পরিণতি হতে পারে। কিন্তু সেই দাবি মানতে নারাজ মৃত দুই শিশুর পরিবার। দেবের পরিবার আঙুল তুলেছে স্থানীয় শ্মশানের তান্ত্রিকদের উপর। তাদের অভিযোগ কয়েকজন তান্ত্রিক অমাবস্যার নিশিতে তন্ত্র সাধনা করেন। তারাই নরবলির উদ্দেশ্যে একলা মন্দিরে যাওয়া দুই ভাইবোনকে হত্যা করেছে।
এরপরই অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গ্রামবাসীরা দুই শিশুর মৃতদেহ নিয়ে দেওবন্দ নানোটি সড়ক অবরোধ করেন। এরপর পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়। ওই ঘটনায় ফরেনসিক পরীক্ষার পাশাপাশি এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাতে করে ঘটনার প্রকৃত কারণ বোঝা যায়। নরবলির মতন ঘটনা এখন দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে বিদ্যমান। এই ঘটনা তারই একটি উদাহরণ হিসেবে দেখছেন সেই গ্রামের মানুষ