ভারত–বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কে শীতলতা কাটতে শুরু করেছে অবশেষে। দীর্ঘ অপেক্ষা ও নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার পর আবারও বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ব্যবসায়িক ভিসা ইস্যু প্রক্রিয়া পুনরায় চালুর ঘোষণা দিল ভারত। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভর্মা বুধবার এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন।
জরুরি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভিসা
ঢাকার বারিধারায় ভারতীয় হাই কমিশনের ‘ফার্মা কানেক্ট’ অনুষ্ঠানেই প্রণয় ভর্মা জানান, কিছু নিয়মকানুন, নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতার কারণে কয়েকটি ভিসা আবেদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এখন সীমিত কর্মীর মধ্যেই পুনরায় সেই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
হাই কমিশনারের বক্তব্য অনুযায়ী,
> “জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের ভিসার আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে। বিশেষ করে ব্যবসায়িক ভিসার প্রয়োজন হলে আবেদনকারী হাই কমিশনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।”
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বহুদিনের দাবি
ফার্মা কানেক্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির উদ্যোক্তা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তারা ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সম্পর্কে স্থবিরতার কারণে ব্যবসায়িক ভিসা না পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁদের সেই আবেদনেই যেন সাড়া দিয়ে মাঝমঞ্চে দাঁড়িয়েই ঘোষণা করেন ভারতীয় হাই কমিশনার।
শেখ হাসিনার পতনের পর বদলেছিল পরিস্থিতি
উল্লেখযোগ্য, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশিরা নির্বিঘ্নে ভারতীয় ভিসা পেতেন— পর্যটন, শিক্ষা, ব্যবসা, চিকিৎসা—সব ক্ষেত্রেই। কিন্তু আওয়ামী লিগ সরকারের পতনের পর ইউসুফ রেজা ইউনূসের নেতৃত্বে নয়া রাজনৈতিক পরিবেশে ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে।
চীন–পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যতা বৃদ্ধির অভিযোগ, ভারত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য—সব মিলিয়ে দিল্লি–ঢাকা সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়।
রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে সাধারণ ভিসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। পরে শুধুমাত্র চিকিৎসার প্রয়োজনে সীমিত ‘জরুরি ভিসা’ ইস্যু করা হয়।
অবশেষে আবার খুলছে পথ
এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হওয়ার পর ভারত জানিয়ে দিল—
বাংলাদেশিদের জন্য আবারও ব্যবসায়িক ভিসা ইস্যু করা হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ভারতের দরজা খুলে যাচ্ছে ওপার বাংলার মানুষের জন্য।
দুই দেশের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের মতে, এই সিদ্ধান্তে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আবার নতুন গতি পাবে। বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যাল, নির্মাণ, প্রযুক্তি, অটোমোবাইল, পর্যটন—সব ক্ষেত্রেই এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
আরও পড়ুন
ব্যাগ স্ক্যান বাধ্যতামূলক, দিল্লি বিস্ফোরণের পর হাওড়া-শিয়ালদা স্টেশনে কড়া নিরাপত্তা
