কফির সঙ্গে কোন খাবার একদম নয়: হৃদরোগ থেকে কিডনির পাথর—বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

শীতের সকালে বা বিকেলের আড্ডায় এক কাপ উষ্ণ কফির আকর্ষণ অস্বীকার করা কঠিন। ঠান্ডা বাড়লে অনেকেই দিনে কয়েকবার কফি পান করেন। কেউ আবার ঘুম ভাঙতেই খালি পেটে কফি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, খালি পেটে কিংবা কফির সঙ্গে ভুল খাবার খেলে শরীরে তৈরি হতে পারে নানা জটিলতা—হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে শুরু করে কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়া পর্যন্ত।

কেন সতর্ক হবেন কফি পানের সময়?
কফির মধ্যে থাকা ক্যাফিন শরীরের অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ শোষণে বাধা তৈরি করে। আবার কফির সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট খাবার খেলে রক্তে শর্করার হঠাৎ উত্থান, পাচনতন্ত্রে অস্বস্তি, ক্যালসিয়াম ঘাটতি বা কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নলিখিত খাবারগুলি কফির সঙ্গে একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

১) মিষ্টিজাতীয় বেকারি খাবার
20251125 105015
কেক, কুকিজ বা পেস্ট্রির মতো মিষ্টিজাতীয় খাবার কফির সঙ্গে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। এর ফলে অল্প সময়েই ক্লান্তি বা মাথা ঝিমঝিম ভাব দেখা দেয়। নিয়মিত এমন অভ্যাস ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।

২) উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য
চিজ, মাখন বা অন্যান্য উচ্চ-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার কফির সঙ্গে খেলে হজম হতে সময় লাগে। এতে পেটে গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা ভারীভাব তৈরি হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে অম্বল বা পাকস্থলির প্রদাহও বাড়তে পারে।

৩) কফিতে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত চিনি
কফিকে সুস্বাদু করতে অনেকেই এতে অতিরিক্ত চিনি মেশান। কিন্তু অতিরিক্ত চিনি শরীরে প্রদাহ বাড়ায়, ওজন বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি ত্বরান্বিত করে। দীর্ঘ দিন এ অভ্যাস বজায় থাকলে মেটাবলিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪) ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার
কফি শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়। ফলে দুধ, পনির বা ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যদি কফির সঙ্গে খান, তাহলে শরীর সেগুলির পূর্ণ সুবিধা পায় না। এতে দীর্ঘমেয়াদে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়াম অপশোষণের কারণে কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।

৫) অতিরিক্ত অ্যাসিডিক খাবার
20251125 105043
টমেটো, লেবু বা সাইট্রাস জাতীয় ফল কফির সঙ্গে খেলে পাকস্থলির অ্যাসিডের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়। কফি নিজেই অ্যাসিডিক—তার সঙ্গে অ্যাসিডিক খাবার যোগ হলে গ্যাস্ট্রাইটিস, অম্বল কিংবা পেটের আলসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৬) আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
ডিম, পালংশাক বা আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কফি পান করলে শরীরে আয়রন শোষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এতে আয়রন ঘাটতি বা অ্যানিমিয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

তাহলে কফির সঙ্গে কী খাবেন?
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন—
কফির সঙ্গে হালকা স্ন্যাকস যেমন—বাদাম, ক্র্যাকার, সেদ্ধ ডিম (কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে), বা ওটস-ভিত্তিক আইটেম ভালো।
কফি খাবার পরে অন্তত ৩০–৬০ মিনিট বিরতি রাখা ভালো।

শেষ কথা
কফি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং সীমিত পরিমাণে এটি উপকারীও। তবে কফির সঙ্গে কোন খাবার মিলিয়ে খাচ্ছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুল মিলনে হৃদরোগ থেকে কিডনির পাথর—সবকিছুর ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই কফির স্বাদে ডুবে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হোন আপনার প্লেটে থাকা খাবারটি শরীরের ক্ষতি করছে কি না।

শুধু হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয় না, জোয়ান খেলে শরীরের অনেক সমস্যা নিবারণ হয় মুখরোচক বাদাম চিক্কি খেতে দারুন, বাড়িতেই তৈরী হবে, জানুন রেসিপি এইভাবে তেজপাতা পোড়ালে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে 5 Best Night Creams ৪ মাসের শিশু ২৪০ কোটির মালিক