কোন অভাবে টালিগঞ্জের রাস্তায় ভিক্ষা করতে হয়েছিল মহানায়ক উত্তমকুমারকে?

Why did Mahanayak Uttam Kumar beg on the streets of Talliganj?

বাংলা সিনেমাপ্রেমীরা তার মৃত্যুর এত বছর পরেও একজনকেই মহানায়ক হিসেবে শ্রদ্ধা করেন। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন মহানায়ক উত্তম কুমার৷ সিনেমা জগতে এক বহুল পরিচিত নাম৷ বাংলা সিনেমার এক কিংবদন্তি হয়ে রয়ে গিয়েছেন তিনি৷ বাঙালি উত্তম কুমারের অভিনয়কে যে আজও ভুলতে পারেনি তা মহানায়কের জনপ্রিয়তায় স্পষ্ট। সম্প্রতি মহানায়ককে নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি বাংলা সিনেমা ‘অতি উত্তম’।

এই ছবিতে প্রযুক্তির সাহায্যে মহানায়ককে বর্তমান প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে এনেছেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে একাধিক ছবি থেকে উত্তম কুমারের শট কেটে তৈরি করা হয়েছে নতুন ছবিটি। তবে এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে করা হয়নি তা পরিচালক সৃজিত মুখার্জি আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

এই ছবি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায় মহানায়কের আরেক রূপের সঙ্গে সকলকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। মহানায়ক প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “উত্তমকুমারকে সকলে এক দারুণ অভিনেতা এবং মহানায়ক-সুপারস্টার হিসেবেই চেনেন। কিন্তু তিনি যে কত বড় মনের মানুষ ছিলেন, তা কেউ জানেনই না। তিনি নিজেও চিনতে দেননি হয়তো। আমার কাছে উত্তমদা মহানায়কের পাশাপাশি একজন মানবিক মানুষ।”

বর্ষীয়ান অভিনেত্রী আরও জানিয়েছেন, মহানায়ক উত্তম কুমার একবার বন্যাত্রাণের সাহায্য করতে গিয়ে ভিক্ষা করেছিলেন। টালিগঞ্জের রাস্তায় ভিক্ষা করেছিলেন উত্তম কুমার। সেইসময় বন্যা হয়। আর তাতে বিচলিত হয়ে পড়েন উত্তম কুমার। সেই অবস্থায় ঘরে নিরাপদে বসে থাকতে পারেননি৷ ত্রাণ নিয়ে ছুটে গিয়েছেন বন্যা কবলিত অঞ্চলে।

তার কাছে থাকা সমস্ত অর্থ দিয়েও ত্রাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। এরপর তিনি টালিগঞ্জের রাস্তায় সহকারীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। মহানায়কের এই কাজ সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন বলে জানিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। এছাড়া মেকআপ আর্টিস্টের মেয়ের বিয়ে না হলে, বর পক্ষ পণ চাইছে যা দিতে অসমর্থ মেয়ের বাবা তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে এগিয়ে যেতেন উত্তম কুমার।

এক মেকআপ আর্টিস্টের মেয়ের বিয়েতে ২৫ হাজার টাকা দরকার ছিল। তাকে অভয় দিয়েছিলেন উত্তম কুমার। পরে সেই শিল্পীকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন তিনি। মাধবী মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, তিনি বেশ কিছু ছবিতে উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাই তিনি দেখেছেন শ্যুটিং ফ্লোরে কীভাবে উত্তম কুমার সকলের খোঁজ নিতেন। কারোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা তার তদারকি করতেন। তাই এমন একজন মানুষকে হারিয়ে আজও তিনি ভারাক্রান্ত।

আরও পড়ুন,
*‘যৌনতার জন্য নয়’, চারদিকে শুধু পরকীয়া, কী কামনা করেন করেন উত্তম কুমারের নাতবৌ?