কেওড়াতলা মহাশ্মশান থেকে আনা মালায় শুটিং মহানায়ক উত্তমকুমারের! কোন সিনেমায় ঘটেছিল এই ঘটনা?

বাংলা সিনেমা জগতের জনপ্রিয় জুটি উত্তম ও সুচিত্রা। তাদের জুটি বেঁধে একের পর এক সিনেমা যা মন জুড়িয়েছে দর্শকদের। তাদের একটি জনপ্রিয় সিনেমা হলো ‘হারানো সুর’। এই সিনেমা আজও বাঙালির হৃদয়ে জায়গা করে রয়েছে। তবে এই সিনেমার একটি দৃশ্যের শ্যুটিং-এর সময় এক ঘটনা ঘটে। যা সম্পর্ক কখনও অবগত ছিলেন না মহানায়ক উত্তম কুমার। ‘হারানো সুর’-এর শ্যুটিং চলছিল টালিগঞ্জে। সেইসময় দৃশ্যের কয়েকটি শট নিতে হবে।

এদিকে সেই দৃশ্যের শ্যুটের জন্য নিউ থিয়েটার্স স্থান ঠিক হয়। আর সেখানে এক কাণ্ড ঘটে। ১৯৫৬ সালের কলকাতা এতটা চাকচিক্য ছিল না। চারিদিকে ছিল না এত বড় বড় প্রাসাদ সমান বাড়ি। চারিদিকে ছিল তখন গাছপালা। সন্ধ্যা হলে তখন রাস্তা জনমানসহীন হয়ে পড়ত। চারিদিকে নিস্তব্ধতা, ঝি ঝি পোকার শব্দ। সেইসময় নিউ থিয়েটার্সে ‘হারানো সুর’ ছবির শ্যুটিং চলছিল।

গানের দৃশ্যের শ্যুট করা হবে। এদিকে কী কী শট থাকবে তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা সম্পন্ন হয়েছে। ‘তুমি যে আমার’ গানে শ্যুটিং করার কথা ছিল উত্তম ও সুচিত্রার। আর দৃশ্যে শট নিতে গেলে লাগবে দু’টি রজনীগন্ধার মালা। একটি থাকবে সুচিত্রার গলায় এবং অপরটি থাকবে উত্তম কুমারের গলায়। কিন্তু এখানেই বাঁধে যত বিপত্তি। কারণ মালা ছিল তখন একটি। এদিকে শ্যুটের সমস্ত আয়োজন তৈরি হয়ে গিয়েছে।

এদিকে অনেকক্ষণ হলো সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের দিকে এগিয়েছে। ফুটপাত সহ কোনো ফুলের দোকান তখন খোলা নেই। এমন সময় কি করা যায়! কাছাকাছি বলতে তখন লেক মার্কেট। এদিকে পরিচালকের মাথায় তখন হাত পড়েছে। এই খবর যদি এমন সময় উত্তম কিংবা সুচিত্রাকে দেওয়া হয় তখন আর রক্ষে থাকবে না। এদিকে সুচিত্রাকে শুধু মালা দিলে উত্তম কুমার ক্ষুন্ন হবেন আবার উত্তমকে মালা দিলে সুচিত্রা রাগ করবেন।

Uttam Kumar Suchitra Bi43BSWl3b

এই অবস্থায় পরিচালক এক ছোকরাকে মালা আনতে পাঠালেন। এরপর মালা আসলো এবং সেই শট সম্পন্ন হলো। এদিকে উত্তম কুমার জানেন না সেই মালা কেওড়াতলা মহাশ্মশান থেকে আনা হয়েছে। পরবর্তীকালে পরিচালক তার ঘনিষ্ঠ মহলে দুঃখ করে বলেছিলেন তিনি কোনোদিন উত্তম কুমারকে আসল সত্যিটা জানাতে পারেননি। যদিও জানলে মহানায়ক কিছুই মনে করতেন না।

আরও পড়ুন,
*অতীত ও মাদকাসক্তি নিয়ে মুখ খুললেন হানি সিং

error: Content is protected !!