বিশ্বজুড়ে ধন-সম্পদের বৈষম্য এখন ‘জরুরি পর্যায়ের সঙ্কট’। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিটজের নেতৃত্বে তৈরি এক নতুন আন্তর্জাতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য—২০০০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট নতুন সম্পদের ৪১ শতাংশ চলে গিয়েছে শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর হাতে। বিপরীতে নীচের অর্ধেক জনগোষ্ঠী পেয়েছে মাত্র ১ শতাংশ।
বিশেষত ভারতের পরিস্থিতি আরও তীব্র। দেশে সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশ মানুষের সম্পদ ২০০০–২০২৩ সময়কালে বেড়েছে ৬২ শতাংশ। চীনে এই বৃদ্ধি ৫৪ শতাংশ, আর আমেরিকায় ১৯৮০ সালের পর থেকে ৫ শতাংশ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৭৪ শতাংশ মানুষ যেখানে বাস করেন সেই দেশগুলির অর্ধেকেরও বেশি দেশে ধনীদের সম্পদ অংশীদারি গত দুই দশকে বেড়েছে।
রিপোর্টে স্পষ্ট মন্তব্য—এই বৈষম্য কোনও স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ফল নয়, বরং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব। সঠিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাই পারে এই বৈষম্য নিয়ন্ত্রণ করতে। তাই জি-২০ গোষ্ঠীকে এগিয়ে এসে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সমাধানের প্রস্তাব হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আইপিসিসি-র মতো কাজ করবে এমন একটি ‘আন্তর্জাতিক বৈষম্য প্যানেল’ তৈরি করা জরুরি। বৈষম্যের বৈশ্বিক প্রবণতা শনাক্ত করা, তথ্য বিশ্লেষণ এবং নীতি নির্ধারণে সহায়তা করবে এই প্রতিষ্ঠান।
রিপোর্টের আরও সতর্কবার্তা—যেসব দেশে সম্পদের বৈষম্য বেশি, সেসব দেশে গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের ঝুঁকি সাত গুণ বেশি। ২০২০ সালের পর দারিদ্র কমার গতি মন্থর হয়েছে, বরং কিছু ক্ষেত্রে বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ২৩ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়, আর ১৩ কোটি মানুষ চিকিৎসা খরচের চাপে দারিদ্র্যের ফাঁদে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে বিশ্ব অর্থনীতি, গণতন্ত্র, জলবায়ু মোকাবিলা—সব কিছুই গভীর সঙ্কটে পড়বে।
আরও পড়ুন
পোস্ট অফিস লক্ষ্মীর ভান্ডার স্কিম! অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১০ হাজার! আবেদন করবেন কীভাবে? জানুন
FAQ
1. প্রশ্ন: রিপোর্টটি কার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে?
উত্তর: নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিটজের নেতৃত্বে।
2. প্রশ্ন: কোন সময়সীমার বৈষম্যের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে?
উত্তর: ২০০০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
3. প্রশ্ন: বিশ্বে নতুন সম্পদের কত শতাংশ শীর্ষ ১% ধনী দখল করেছে?
উত্তর: ৪১ শতাংশ।
4. প্রশ্ন: নীচের ৫০% জনগোষ্ঠী কত সম্পদ পেয়েছে?
উত্তর: মাত্র ১ শতাংশ।
5. প্রশ্ন: ভারতে শীর্ষ ১% মানুষের সম্পদ কত বৃদ্ধি পেয়েছে?
উত্তর: ২০০০–২০২৩ সময়ে ৬২ শতাংশ।
6. প্রশ্ন: চীনে ধনীদের সম্পদ বৃদ্ধির হার কত?
উত্তর: ৫৪ শতাংশ।
7. প্রশ্ন: আমেরিকায় ১৯৮০ সালের পর থেকে ধনী ১% এর সম্পদ বৃদ্ধির হার কত?
উত্তর: ৫ শতাংশ।
8. প্রশ্ন: রিপোর্টে বৈষম্যকে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘জরুরি পর্যায়ের সঙ্কট’।
9. пр: বৈষম্য কি স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ফল?
উ: না, এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল।
10. প্রশ্ন: সমস্যা সমাধানে কোন সংস্থা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আন্তর্জাতিক বৈষম্য প্যানেল।
11. প্রশ্ন: প্রস্তাবিত প্যানেল কোন সংস্থার ধাঁচে তৈরি হবে?
উত্তর: আইপিসিসি-এর ধাঁচে।
12. প্রশ্ন: বৈষম্য বেশি হলে গণতন্ত্রে কী প্রভাব পড়ে?
উত্তর: গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের ঝুঁকি সাত গুণ বৃদ্ধি পায়।
13. প্রশ্ন: বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় কত মানুষ ভুগছে?
উত্তর: প্রায় ২৩ কোটি মানুষ।
14. প্রশ্ন: ২০১৯ সালের তুলনায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কত বেড়েছে?
উত্তর: ৩৩.৫ কোটি।
15. প্রশ্ন: বিশ্বে কত মানুষের কাছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেই?
উত্তর: প্রায় বিশ্বের অর্ধেক মানুষ।
16. প্রশ্ন: চিকিৎসা খরচের কারণে দারিদ্র্যে কত মানুষ পড়েছে?
উত্তর: ১৩ কোটি মানুষ।
17. প্রশ্ন: কোন কোন দেশের আয় বৃদ্ধির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ভারত ও চীন।
18. প্রশ্ন: ধনীদের সম্পদের অংশীদারি কত দেশে বেড়েছে?
উত্তর: বিশ্বের ৭৪% জনসংখ্যার বাস করা দেশগুলির অর্ধেকেরও বেশি।
19. প্রশ্ন: জি-২০ গোষ্ঠীর প্রতি কী আহ্বান জানানো হয়েছে?
উত্তর: বৈষম্য মোকাবিলায় নেতৃত্ব নেওয়ার আহ্বান।
20. প্রশ্ন: বৈষম্য কোন কোন বিষয়ের ভবিষ্যৎকে বিপদে ফেলছে?
উত্তর: অর্থনীতি, গণতন্ত্র, জলবায়ু মোকাবিলা ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা।
21. প্রশ্ন: রিপোর্টটি কোন দেশের সভাপতিত্বকালে শুরু করা সমীক্ষা থেকে তৈরি?
উত্তর: দক্ষিণ আফ্রিকার জি-২০ সভাপতিত্বকালে।
22. প্রশ্ন: বৈষম্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ কী বলা হয়েছে?
উত্তর: রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও নীতি।
23. প্রশ্ন: বৈষম্য কীভাবে উন্নয়নকে প্রভাবিত করে?
উত্তর: দারিদ্র কমার গতি থেমে যায় এবং সামাজিক অস্থিরতা বাড়ে।
24. প্রশ্ন: রিপোর্টে বৈষম্য রোধে কী প্রয়োজন বলা হয়েছে?
উত্তর: সুনির্দিষ্ট নীতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
25. প্রশ্ন: বৈষম্য পর্যবেক্ষণের জন্য কোন ব্যবস্থা দরকার?
উত্তর: বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ ও তথ্য বিশ্লেষণ।
26. প্রশ্ন: বৈষম্য বাড়লে সামাজিক সংখ্যাগরিষ্ঠের ওপর কী প্রভাব পড়ে?
উত্তর: সম্পদ, স্বাস্থ্য ও সুযোগ হারানোর ঝুঁকি বাড়ে।
27. প্রশ্ন: বৈষম্যের কারণে জলবায়ু মোকাবিলা কীভাবে বাধাগ্রস্ত হয়?
উত্তর: সম্পদ ও নীতি-সহায়তার অভাবে কার্যকর পদক্ষেপ দেরি হয়।
28. প্রশ্ন: ভারতে সম্পদ বৈষম্যের কোন দিকটি সবচেয়ে উদ্বেগজনক?
উত্তর: ধনী ১% এর দ্রুত সম্পদ বৃদ্ধির হার।
29. প্রশ্ন: নতুন প্যানেলের প্রধান কাজ কী হবে?
উত্তর: বৈষম্যের তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও নীতি সুপারিশ।
30. প্রশ্ন: বৈষম্য রোধে এখনই পদক্ষেপ জরুরি কেন?
উত্তর: নাহলে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন দুটিই গভীর সঙ্কটে পড়বে।
