ধরে নিন ওই মেয়েটা আপনার বাড়ির মেয়ে! মমতাকে খোলা চিঠি রুদ্রনীলের

গত ৮ই আগস্ট কলকাতার বুকে একটি ব্যস্ততম সরকারি হাসপাতালে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয় এক তরুণী চিকিৎসককে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে পড়েছে প্রশাসনের উপর। গোটা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন প্রতিবাদ করতে। সকলের একটিই দাবি দোষীরা যেনো শাস্তি পায়। ওই তরুণীর মৃত্যুর ন্যায় বিচারের আশায় দিন গুনছেন সকলে। অনেকেই অভিযোগ করছেন রাজ্যের শাসক দল দোষীদের আড়াল করতে চাইছে।

আর এই সময় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছেন ‘রাম-বাম’ অর্থাৎ বিজেপি ও সিপিএম-এর উপর। আর অপরদিকে চুপ নেই বিরোধীরাও। তারাও নিজেদের মতন করে প্রতিবাদে নেমেছেন। এবার তাই শাসক দলকে তিরস্কার করে একটি খোলা চিঠি লিখলেন টলিউড অভিনেতা ও বিজেপির নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তার এই ভাইরাল ভিডিও ছড়িয়ে গিয়েছে চারিদিকে।

রুদ্রনীলকে ভিডিও শুরু হওয়ার প্রথমেই বলতে শোনা যায়, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, জাস্টিস চাই আওয়াজ যখন সব মানুষের বক্ষে, লিখছি একটা খোলা চিঠি সব জনতার পক্ষে। জাস্টিস চাই-জাস্টিস চাই, কে দেবে জাস্টিস? প্রমাণ ছাড়া বিচার কঠিন, প্রমাণ তো প্রায় হাপিস। কারণ প্রথম থেকেই প্রমাণ মোছার কাজ সেরেছে পুলিশ। একটা সিভিক জেলে পুড়ে বানাতে চান ফুলিশ। ইচ্ছে থাকে তড়িঘড়ি, ঝুলিয়ে দাও ফাঁসি। ধনঞ্জয়ের স্টাইলে লোকাও, আসল যারা দোষী।”

এরপর তিনি হাসপাতালের গুপ্তচক্র যা মানুষের মুখে মুখে উঠে আসছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলের কাছে। তার প্রশ্নে উঠে এসেছে মৃত তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত করার কথা এবং পুলিশের তরফে তরুণীর মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। তার কবিতায় ফুটে উঠেছে গত ১৪ই জানুয়ারির রাতে গোটা রাজ্য সহ দেশ জুড়ে মিছিলের কথা। দলে দলে যেভাবে মেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছেন তা উল্লেখ করতে ভোলেননি তিনি।

রুদ্রনীল আরও উল্লেখ করলেন, “সেদিন চার তলাতে ভাঙচুড়ে, প্ল্যানিং ছিল প্রমাণ ধ্বংসের। কিন্তু তাণ্ডব হল তিন তলাতে, অশিক্ষিতের বংশ। বাঁচতে গিয়ে দোষ চাপালেন দায়ি নাকি রাম-বাম, কোন ছকেতে দোষ চাপাবেন, ঝরছে তো আপনার কাল ঘাম। তারপর মৃত্যু কেনার দর কষলেন, মেয়ের দাম নাকি ১০ লাখ। যেন আলিবাবার চল্লিশ চোর বলছে চিচিং ফাঁক। ফাসছি দেখে মিছিল করেন, হে মুখ্যমন্ত্রী। সবার সামনে প্রমাণ দিলেন কে আসল ষড়ষন্ত্রী।”

এর পাশাপাশি রুদ্রনীল বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি নিজেই একজন পুলিশমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী হয়েও নিজের বিরুদ্ধে নিজেই রাস্তায় নেমেছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দলের তরফে ডাকা এই মিছিলের সমালোচনা করেছেন অনেকেই। এর পাশাপাশি গোটা ঘটনাটি প্রশ্নে আকারে প্রকাশ্যে শাসক দলের কাছে একটি জিজ্ঞাসা চিহ্ন রেখে ব্যক্ত করেছেন রুদ্রনীল। বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতে বিষয়টির তদন্ত করছে সিবিআই। এদিকে সিবিআই-এর তরফে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আর জি কর মেডিকেল হাসপাতালে সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। ঘটনার মোড় কোন দিকে এগোয় এখন সেটিই দেখার।

আরও পড়ুন,
*এই প্রথম সন্তানকে প্রকাশ্যে আনল রাহুল-প্রীতি, বাবার কোলে ছোট্ট প্রিন্সেস