দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে মেয়েকে পড়াশোনা করিয়েছেন বাবা-মা। সেই মেয়েই এখন গ্রামের গৌরব হয়ে উঠেছেন। হুগলীর এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা আসমাতারা খাতুন, যিনি এখন বর্তমানে খড়গপুর বিভাগের রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট।
জানা গিয়েছে ছোটো থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন আসমাতারা। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। আর তার পড়াশোনার সময় পাশে থেকেছেন বাবা-মা। সংসারে যথেষ্ট আর্থিক অনটন ছিলো। তবে কোনোদিনই তা মেয়ের পড়াশোনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
বাবা সামান্য জমিতে চাষবাস করে যা উপার্জন করতেন তাই দিয়েই তিন সন্তানকে মানুষ করেছেন। আর্থিক পরিস্থিতির কারণে ভালো কোচিং সেন্টারেও পড়াশোনা করতে পারেনি আসমাতারা। ফলস্বরূপ তাকে ইউটিউবের মাধ্যমে নিজে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে।
গরুর দুধ বেচা থেকে শুরু করে সোনার গহনাও বন্ধক দিতে হয়েছে মেয়ের পড়াশোনায়। কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্য লাভ করেছেন আসমাতারা। তিনি জানিয়েছেন প্রথমে থেকেই সরকারি চাকরির লক্ষ্য ছিল তার। তবে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করেও চাকরি পাননি।
বলেন, ‘হতাশ হয়েছি তবে ভেঙে পড়িনি। ফের প্রস্তুতি শুরু করি। কলকাতায় গিয়ে ব্যাংকের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিই। পরে রেলের চাকরির চেষ্টা করি। অবশষে লোকো পাইলট হিসেবে সফলতা পাই।’ তাইতো নারী দিবসের প্রাক্কালে তিনি সকলকে বার্তা দিয়েছেন কে কী বললো তাতে কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকার জন্য।
অন্যদিকে তার বাবা-মা জানিয়েছেন তাদের সন্তানদের পরিচয়েই তারা পরিচিত হচ্ছেন। আজ তাদের সবাই লোকো পাইলটের বাবা-মা বলে চেনেন। তাই মেয়ের সাফল্যে তারা ভীষণই গর্বিত। পাশাপাশি তারা অন্য বাবা-মায়ের জন্য এই বার্তা দিয়েছেন যে, মেয়েদের বিয়ে না দিয়ে তাদের স্বপ্নকে সার্থক করার জন্য পাশে থাকতে।