ভারত একসময় ছিল রাজতন্ত্রের অধীন। রাজারা দেশ শাসন করতেন এবং প্রজারা তা পালন করতেন৷ বর্তমানে এটি একটি গনতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই গনতান্ত্রিক দেশে একদিনের জন্য রাজতন্ত্রের উদযাপন হয় আজও। একদিন রাজা সেজে সৈন্যসামন্ত নিয়ে ‘রাজ্য ভ্রমণে’ বার হন রাজামশাই। ভালো কাজের রয়েছে উপহার ও খারাপ কাজের রয়েছে শাস্তি।
আর এই ঘটনা গত ১০০ বছর ধরে চলে আসছে বাংলার একটি জেলায়। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার বহরান গ্রাম। কেতুগ্রামের এই গ্রামটি পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্ত লাগোয়া। প্রতি ১২ বছর অন্তর এই গ্রামে ফিরে আসে রাজতন্ত্র। এটি পালিত হয় জয়দুর্গা পুজোর দিন। এটিই সেই গ্রামের রীতি।
ওইদিন ব্রাহ্মণ বাড়ির একজনকে রাজা সাজিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চাপিয়ে সৈন্যসামন্ত নিয়ে তাকে নিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। সেই রাজা গোটা গ্রামের হালহকিকত শোনেন ও সমস্ত খোঁজখবর নেন। এভাবেই একদিনের জন্য গ্রামে পালিত হয় রাজতন্ত্র। এবছর রাজা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৮৫ বছরের অম্বিকাপ্রসাদ চট্টরাজ।
ওই একদিন প্রজারা নিয়ম না মানলে তার জন্য বরাদ্দ থাকে শাস্তি। তবে মৃত্যু বা কারাদণ্ড নয়, শাস্তি হিসেবে দিতে হয় জরিমানা। তবে সেই জরিমানা হিসেবে দেওয়া সকল প্রজার অর্থ যায় পুজোর কাজে। কর বাবদ আদায়কৃত অর্থ পুজোর কাজ হলে সেখানেই দেওয়া হয়৷
তবে যেহেতু একদিন সাড়ম্বরে পালিত হয় রাজতন্ত্র তাই তা দেখার জন্য লোকের ভিড় হয় প্রচুর। রাজনৈতিক নেতারাও হাজির হন। ওইদিন কেতুগ্রামে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। এদিনও অর্থাৎ সোমবার সেই অনুষ্ঠান পালিত হল।
এদিন বিজেপির প্রার্থী অসীম সরকার ও তৃণমূলের প্রার্থী শর্মিলা সরকার দলের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে কালনার ১০৮ শিব মন্দিরে পুজো দেন। তার সঙ্গে তারা চালিয়েছেন প্রচার। একদিকে রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচার ও অপরদিকে একদিনের জন্য রাজতন্ত্র ওই অঞ্চলের চিত্র বদলে দিয়েছে।