আন্তর্জাতিক নারী দিবস
International Women’s Day: আগামী ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। গোটা বিশ্ব জুড়ে ওই দিন নারীদের প্রতি সম্মান জানানোর দিন। তবে এই বিশেষ দিনেই নারীদের সম্মান জানানোর কি কারণ রয়েছে তা নিয়ে আজকের প্রতিবেদন। ঘরের এককোণে পড়ে থাকা থেকে আজকে দেশের বড় পদে নারীদের আসীন হওয়ার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ লড়াই।
‘যোদ্ধা’ ছিলেন কারা?
পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বেড়াজাল ডিঙিয়ে নারীরা লড়াই করে এগিয়ে গিয়েছেন। আর এই বেড়াজাল ডিঙিয়ে কেউ হলেন প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলি, প্রথম বানিজ্যিক বিমানের পাইলট দুর্বা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া দেশের নানান গুরুত্বপূর্ণ কাজে দেখা গিয়েছে মহিলাদের। দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন থেকেছেন ইন্দিরা গান্ধী। অপরদিকে বর্তমানে আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। এর পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিহাসের পাতায় নারীদের তালিকা অনেক দীর্ঘ।
মাতঙ্গিনী হাজরা, বাচেন্দ্রী পাল, সুচেতা কৃপালিনী, সরোজিনী নাইডু সহ একাধিক উল্লখযোগ্য নারী চরিত্র যারা ইতিহাসের পাতায় গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে খেলায় দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন বহু মহিলারা। এদিকে ইতিহাসবিদদের নামের মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য যিনি তিনিও একজন মহিলা। তিনি হলেন রোমিলা থাপার। অন্ধকার ঘর থেকে আজকের এই আলোর যাত্রা খুব সহজ ছিল না৷ আর সেই যাত্রার নেপথ্যেই রয়েছে নারী দিবসের আসল উদ্দেশ্য।
সূচনা কীভাবে?
৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস দিনটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। প্রতি বছর এই বিশেষ দিনে মহিলাদের গুরুত্ব ও অবদানের কথা মনে করিয়ে দিতেই দিনটি বিশ্ব জুড়ে পালন করা হয়। এই ঘটনার শুরু জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে ১৫০ বছরের কিছু বেশি সময়। তখন ১৮৫৭ সাল। নিউ ইয়র্কের সুতো কারখানার মহিলা শ্রমিকেরা মজুরিবৈষম্য, কাজের সময়, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শহরের রাস্তায় নামেন। এদিকে মহিলাদের এই পদক্ষেপ দেখে চমকে যান সেইসময়ের সমাজের উপর মহলে বসে থাকা পুরুষেরা।
এরপর লেঠেল বাহিনী দিয়ে সেই মিছিলকে ভেঙে ফেলা হয়। এরপর ১৯০৯ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী জার্মান রাজনীতিবিদ তথা জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের অন্যতম ডাকসাইটে নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে নিউ ইয়র্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন আয়োজিত হয়। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে ১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন আয়োজিত হয়। এই সম্মেলনে যোগ দেন ১৭টি দেশের ১০০ জন মহিলা প্রতিনিধি।
তারা নারী দিবস পালনের একটি প্রস্তাব দেন। ওই সম্মেলনে প্রস্তাব ওঠে নারীদের প্রতি সম্মান জানাতে ও তাদের সম অধিকারের দাবিতে নারী দিবস পালন করতে হবে। এরপর ১৯১৩ সালের ৮ই মার্চ দিনটিতে বহু দেশে নারী দিবস পালন করা শুরু হয়। তবে ওই বিশেষ দিনটিকে নারী দিবস হিসেবে পালন করার জন্য রাষ্ট্রসংঘ থেকে স্বীকৃতি আসে ১৯৭৫ সালে। এরপর থেকে প্রতি বছর ৮ই মার্চ দিনটিকে বিশেষ থিম নিয়ে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।